বিশ্বের অন্যতম ধনী রাজশাসক সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান আর নেই। আজ ৭৩ বছর বয়সে নিজ দেশে মারা যান শেখ খলিফা।
২০০৪ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সম্পদশালী রাষ্ট্র আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন শেখ খলিফা। তবে ২০১৪ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর থেকে কার্যত আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ ছিল তার রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ড। শেখ খলিফার শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার সৎভাই মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এতদিন আরব আমিরাতের শাসক হিসেবে দায়িত্বভার সামলেছেন।
শেখ খলিফা ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠাতা জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের পুত্র। ১৯৭১ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ২০০৪ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আরব আমিরাতের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জায়েদ বিন সুলতান।
২০০৪ সালে জায়েদের মৃত্যুর পর দেশটির দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পান তার পুত্র শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
সংযুক্ত আরব আমিরাত হল মোট সাতটি আমিরাত বা প্রদেশের সমন্বয়ে গঠিত একটি সংযুক্ত রাষ্ট্র। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ধনী আমিরাত হল তেলসম্পদে সমৃদ্ধ আবু ধাবি। সদ্যপ্রয়াত শেখ খলিফা পুরো দেশের প্রেসিডেন্ট ছাড়াও আবু ধাবিরও শাসক ছিলেন। তার পিতা জায়েদ বিন সুলতানও আবু ধাবির শাসক ছিলেন।
শেখ খলিফার মৃত্যু সংবাদ ঘোষণা করা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে। তার মৃত্যুতে দেশটিতে ৪০ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই সময়কালে দেশজুড়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। এছাড়া প্রথম তিনদিন সরকারি, বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, শেখ খলিফা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রকৃত বন্ধু ও সহযোগী। আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকার ও জনগণের মধ্যকার বন্ধন আরও দৃড় করার মাধ্যমে শেখ খলিফার স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাব।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর পর এখন ভাইস-প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাখতুম দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ভাইস-প্রেসিডেন্ট শেখ রাশিদ দুবাই প্রদেশের শাসক।
এরপর দেশটির সাত প্রদেশের শাসকদের নিয়ে গঠিত ফেডারেল কাউন্সিল আগামী ৩০ দিনের মধ্যে বৈঠক করে নিজেদের মধ্য থেকে কোনো একজনকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করবে।