ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি রাশিয়া। পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অংশ ছাড়া দেশটির আর কোথাওই নিজেদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্ততিষ্ঠা করতে পারেনি মস্কো।
এই অবস্থায় স্বল্প মাত্রার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে যুদ্ধের মোড় নিজেদের দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করতে পারে ক্রেমলিন, এমন আশঙ্কা বেশ কিছুদিনের। তবে আজ ব্রিটেনে নিযুক্ত রুশ রাষ্টদূত আন্দ্রেই কেলিন এমন কিছু ঘটার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন।
সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেলিন বলেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রটোকল অনুযায়ী চলমান ইউক্রেন অভিযানের মত পরিস্থিতিতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়না। উল্লেখ্য, রাশিয়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে চালানো হামলাকে ‘যুদ্ধ’ নয়, কেবল ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছে।
রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কেলিন আরও বলেন, রাশিয়ার বিধানে এও বলা আছে, পারমাণবিক অস্ত্র তখনই ব্যবহার করা হবে যখন দেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। এই মূহুর্তে তেমন কিছু ঘটেনি। তাই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের সাথে কোনো মাত্রারই পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগের কোনো সম্পর্ক নেই।
তবে অভিযান শুরুর পরপরই ফেব্রুয়ারি শেষ নাগাদ নিজ দেশের পরমাণূ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণকারী ইউনিটের জন্য ‘সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা’ জারি করেছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্টের ঐ ঘোষণার পর থেকেই ক্রেমলিন চলমান সংঘাতে প্রয়োজনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
তবে এমন আশঙ্কার প্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, পুতিন যদি পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগ করেনও, তবুও সেটা হিরোশিমা, নাগাসাকির মত দানবীয় মাত্রায় নয়, বরং হবে স্বল্প মাত্রার। এধরনের পারমাণবিক অস্ত্রকে বলা হয় ‘ট্যাকটিকাল ওয়েপেন’। এগুলো যেমন কম দূরত্ব অতিক্রম করে, তেমনি বিস্ফোরণের তীব্রতা ও ক্ষয়ক্ষতিও হয় কম।
বিপরীতে প্রচলিত পারমাণবিক অস্ত্র বা ‘স্ট্রাটেজিক ওয়েপেন’ একদিকে যেমন দীর্ঘ পথ এমনকি এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে পাড়ি দিতে পারে, অন্যদিকে এগুলোর বিস্ফোরণ ক্ষমতা হয় ব্যাপক। এধরনের একটি বোমার বিস্ফোরণও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ডেকে আনতে পারে পৃথিবীতে।