কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও উত্তেজনার পারদ চড়ার আশংকা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। মার্কিন সংসদের নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির বহুল আলোচিত তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে গত মাসেই মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল ওয়াশিংটন ও বেইজিং।
তার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার তাইওয়ানের কাছে প্রায় ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমরাস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চীন।
ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাস এক বিবৃতিতে অবিলম্বে অস্ত্র বিক্রির এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছে। অন্যথায় যুক্তরাষ্ট্রকে ‘পাল্টা-ব্যবস্থার’ মুখোমুখি করার হুশিয়ারি দিয়েছে।
দূতাবাসের মুখপাত্র বলেছেন, মার্কিন প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে ‘ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ’ করবে। বেইজিং এর প্রতিক্রিয়ায় যৌক্তিক এবং জরুরি পদক্ষেপ নেবে।
দক্ষিণ-চীন সাগরে সমুদ্রবেষ্টিত ছোট্ট দ্বীপ তাইওয়ান নিজেদেরকে স্বার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য করে। কিন্তু চীন এটিকে ঘটনাচক্রে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া নিজেদেরই একটি বিদ্রোহী প্রদেশ হিসেবে দাবি করে আসছে।
যদিও বাকি বিশ্বের মত যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোও তাইওয়ানকে রাষ্ট্র হিসেবে দালিলিক স্বীকৃতি দেয়না, তবে পরোক্ষভাবে একে আলাদা দেশেরই মর্যাদা দেয় তারা।
একারণেই বলপ্রয়োগ করে তাইওয়ান দখল করে নেওয়ার চীনা হুমকির প্রেক্ষিতে দশকের পর দশক ধরে দ্বীপটিকে বিপুল সামরিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি দিয়ে আসছে মার্কিন প্রশাসন।
আজ ঘোষিত সর্বশেষ এরূপ সামরিক প্যাকেজের আওতায় রয়েছে ৬৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রাডার সতর্কতা ব্যবস্থা, ৩৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ৬০ টি হারপুন মিসাইল, যেগুলো বিশালাকার যুদ্ধজাহাজ ডুবিয়ে দিতে সক্ষম এবং ৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ভূমি থেকে আকাশ ও আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য সাইডউইন্ডার মিসাইল।
তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির সর্বশেষ এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, তাইওয়ানের সামগ্রিক নিরাপত্তার জন্য এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। চীনের প্রতি তাইওয়ানের ওপর সামরিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ না করে বরং অর্থপূর্ণ সংলাপে বসার আহবানও জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
এদিকে চীনের সাথে টালমাটাল সম্পর্কে থাকা তাইওয়ানের মত, আরেক মার্কিন প্রতিদ্বন্দী রাশিয়ার সাথে যুদ্ধরত ইউক্রেনকেও বিপুল সামরিক সহায়তার নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ সপ্তাহেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের জন্য আরও ১৩.৭ বিলিয়ন ডলারের জরুরি অর্থসাহায্য অনুমোদনের জন্য মার্কিন কংগ্রেসের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।