ইরানের সাথে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করল আলবেনিয়া। একই সাথে দেশটিতে অবস্থিত ইরানি দূতাবাসের কূটনীতিক ও কর্মীদের অবিলম্বে আলবেনিয়া ছাড়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ১৫ জুলাই দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের বলকান অঞ্চলের ছোট্ট দেশ আলবেনিয়া বড় আকারের সাইবার হামলার শিকার হয়। এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় আলবেনীয় সরকার।
দু’মাস পর তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইদি রায়াম দাবি করেছেন, স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে যে ইরান ১৫ জুলাইয়ের ঐ হামলাটি চালানোর জন্য চারটি হ্যাকিং গোষ্ঠীকে ভাড়া করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী ইদি বলেন, হ্যাকারদের উদ্দেশ্য ছিল গণপরিবহনসহ আলবেনিয়ার সেবা খাতগুলোকে অচল করে দেওয়া, প্রশাসনিক ওয়েবসাইটগুলো থেকে জরুরি সরকারি তথ্য চুরি করা ও মুছে ফেলা এবং এসবের মাধ্যমে সর্বোপরি দেশটিতে অরাজকতা সৃষ্টি করা।
প্রতিক্রিয়ায় ইরান আলবেনিও প্রধানমন্ত্রীর এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর আলবেনিয়া থেকে ইরানি দূতাবাসের কূটনীতিকদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, হতে পারে ‘তৃতীয় কোন পক্ষ’ আলবেনিয়ায় সাইবার হামলার সাথে জড়িত।
আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইদি রামা ইরানের বিরুদ্ধে নেওয়া সিদ্ধান্তকে ‘তীব্র প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে মেনে নিলেও দাবি করেছেন, ঘটনার (সাইবার আক্রমণ) অভিঘাত এত বেশি যে এটা করতে তারা বাধ্য হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী রামা বলেন, আলবেনিও সরকারের ডিজিটাল পরিকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়ার লক্ষ্যেই সাইবার হামলাটি চালানো হয়েছিল। তবে একাজে হামলাকারীরা ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, হামলার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আক্রান্ত ওয়েবসাইটগুলোকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া মুছে ফেলা তথ্যও ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়।
১৫ জুলাইয়ের সাইবার হানার কঠোর নিন্দা জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ন্যাটোর সদস্যভুক্ত রাষ্ট্র আলবেনিয়ার ওপর চালানো এই হামলার জন্য তারাও ইরানকে দায়ী করেছে।
ইরানের বহু ভিন্নমতাবলম্বী নাগরিক যারা বিভিন্ন সময়ে প্রাণভয়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাদের অনেককেই আশ্রয় দিয়েছে আলবেনিয়া। মূলত এনিয়েই বেশ কয়েক বছর ধরে শীতল সম্পর্ক বিরাজ করছে ইরান ও আলবেনিয়ার মধ্যে।