মেয়াদের চেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার দায়ে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচাকে বরখাস্ত করেছে দেশটির সাংবিধানিক আদালত।
২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতাসীন প্রায়ুথের প্রধানমন্ত্রী পদে থাকাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে স্বারস্থ হয়েছিল থাইল্যান্ডের বিরোধীদলগুলো। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী একজন প্রধানমন্ত্রী এক মেয়াদে ৮ বছর পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারেন।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা সেনা কর্মকর্তা হিসেবে ২০১৪ সালের মে মাসে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে থাইল্যান্ডের ক্ষমতা দখল করেন। এর তিন মাস পর একই বছর আগস্টে প্রায়ুথ নিজেই নিজেকে সামরিক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
সেই সরকারের অধীনে ২০১৯ সালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় থাইল্যান্ডে। এর আগে ২০১৭ সালে দেশে নতুন সংবিধান বলবৎ করে সামরিক সরকার। ব্যাপক বিধিনিষেধের মধ্যে আয়োজিত.২০১৯ সালের প্রশ্নবিদ্ধ ঐ নির্বাচনে ধারণামতই আবারও ক্ষমতায় ফিরে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেন প্রায়ুথ।
বিরোধী দলগুলোর দাবি, যেহেতু ২০১৪ সালের আগস্ট মাস থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন প্রায়ুথ চান-ওচা, সেইমত চলতি বছর ২০২২ সালের আগস্টেই তার ৮ বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে আইনত তিনি আর ঐ পদে থাকার যোগ্য নন।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথের সমর্থকদের দাবি, যেহেতু নতুন সংবিধান কার্যকর হয়েছে ২০১৭ সালে, ফলে তার পদে থাকার মেয়াদ গণনা করতে হবে ঐ সময় কিংবা ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের সময় থেকে।
এই নিয়ে চলমান রাজনৈতিক বাকবিতন্ডার মধ্যে গত কয়েক মাসে একাধিকবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে থাইল্যান্ডের বিরোধী দলগুলো। তবে সংসদে নিজ দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় প্রতিবারই অনাস্থা ভোটে টিকে যান প্রায়ুথ চান-ওচা।
এই অবস্থায় থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালতের স্বারস্থ হয় দেশটির বিরোধী দলগুলো। দু’পক্ষের শুনানি শেষে আজ প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথের স্বপদে থাকাকে অবৈধ ঘোষণা করে আদালত।
আজকের রায়ের পর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাড়াতে হবে প্রায়ুথকে। অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন ৭৭ বছর বয়সী বর্তমান উপ-প্রধানমন্ত্রী প্রায়িৎ ওয়োংসুয়ান।
আগামী বছর মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী প্রায়িৎ। তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, নির্বাচন এগিয়ে এনে এ বছরের নভেম্বরেই আয়োজন করা হতে পারে।